অসম্ভবঃ নয়

আময়ডেন সেন্ট্রাল জেলের ছোট্ট কেবিনটিতে বসে ভাবছে রন হাওয়ার্ড, জনের একমাত্র ছেলে। স্ত্রীকে হারিয়েছে বহুদিন হয়ে গেল, কাজের চাপের নিজের আপন ছেলেকেও দেখার সুযোগ তেমন হয় না রনের। ঠিক দুবছর সাতমাস নয়দিন হয়ে গেল তার ছেলেকে না দেখার। হয়তো আরও বেশি হবে সময়টা; বাইরের আলোবিহীন এ কেবিনে দিন-তারিখ ঠিক রাখা ভার। তার বাবাকে লেখা শেষ চিঠির কথা ভাবল সে। হয়তো তার বাবা এখনও তার গ্রেফতার হওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানে না, জানার কথাও না।
শুধুই কি গ্রেফতার, কদিন পর তার মৃত্যুদণ্ড হতে যাচ্ছে। সবকিছু করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে, আময়ডেনের সরকারী প্রশাসনের শুধুমাত্র কর্তাব্যক্তিরা ছাড়া এ ব্যাপারে আর কেউ কিছু জানে না। সে অবশ্য আময়ডেনে ছিল অনেক সতর্কভাবেই, কিন্তু ঘরের শত্রু বিভীষণ হলে আর করার কিছু থাকে না। সে প্রথমে ভেবেছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর তিনিই সব ফাঁস করে দিয়েছেন হয়তো, এটা সে তার বাবাকে জানিয়েছিল; কিন্তু গ্রেফতার হবার দিন সে বুঝেছে, আসলে তার সহচরই ফাঁসটা করেছে। সে প্রথমে কোনো সহচর নিতে চায়নি, তার বাবাই কিনা জোর করে একটা সহচর পাঠিয়ে দিল। আর এখন কিনা তার জন্যই তাকে জীবন দিতে হচ্ছে।
কেবিনের একপ্রান্তে একটা ছোট্ট ফুটো আছে, সেটা দিয়ে বাইরে তাকানো যায়। সে ফুটো দিয়ে বাইরে তাকানোর চেষ্টা করেছেঃ সামনে শুধু দেখা যায় বিশাল এক কোরিডোর, ২৬ ঘন্টাই আলো জ্বালানো থাকে, বোঝার কোনো উপায় নেই বাইরে দিন না রাত। প্রতিদিন দ্বিতীয় বেলা খাবার দেয়ার সময়কে সে একদিন হিসেবে বিবেচনা করে। মাঝে মাঝে সে একধরণের উষ্ণ বাতাস অনুভব করতে পারে, এটা তার কাছে অপরিচিত নয়। মিলিটারি ট্রেইনিং-এর সময় সে এ অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিল। তাই সে আন্দাজ করতে পারে সে কোথায় আছেঃ এভারগ্রীন ফরেস্টের খুবই নিকটে কিংবা একদম গ্রেট রিভারের ধার ঘেঁসে। তবে কয়েকশ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীর কোথায় থাকতে পারে, তা বলা ভার।
মাঝে মাঝে নিশ্বাস নিতে তার কষ্ট হয়, বুঝতে পারে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেছে। শীতের এ রাতে অক্সিজেন কমে গেলে কেমন ঝিম ধরে, ঝাপসা চোখে ভেসে ওঠে অনেক পুরনো স্মৃতি, স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে মনে পড়ে বেলের কথা। ভাবে, বেচারা বেল, আর কদিন পর সে এতিম হতে চলছে।

বিকেলে পিটারসন মেরোরিয়ালের তার সেই চিরচেনা বেঞ্চটিতে বসে আছে ফ্রেড, বরাবরের মতোই তার দৃষ্টি চিরসবুজ পাতার ওপরে আশ্রয় নেয়া তুষার কণার দিকে। ভাবে, আজব এ মহাবিশ্ব! টিকে থাকতে গেলে সবাইকেই কোথাও না কোথাও, কারো না কারো উপরে আশ্রয় নিতে হয়। সে কোনোদিন রাজনীতিতে কান দেয়নি, আর আজ নিজের অজান্তেই এক কঠিন রাজনীতির শিকারঃ সে জানে না কতটা কঠিন, কিন্তু এভারগ্রীন মাউন্টেন থেকে যে প্রতিবছর তুষার ঝড় এগিয়ে আসে ইলিয়ায়, তার ভয়াবহতা সম্পর্কে তার বেশ ভাল ধারণা আছে। জন আজকে এই উদাহরণটাই তাকে দিয়েছিল। সে কি বড় একটা ভুল করে বসল? জন বা তাকে এত বিশ্বাসই করে কি করে? সে তো অজপাড়া গায়ের এক সামান্য ছেলে, যার জন্মের আগেই বাবা মারা গেছে। আজকেই প্রথম তার মাথায় এ চিন্তা কাজ করছে না, এর আগেও করেছে, কিন্তু কোনো সদুত্তোর তার মাথায় আসেনি।
একটা জিনিস সে বুঝতে পেরেছে আজকের কথায়, তা হলোঃ জনের পরাজয় নিশ্চিত এবং তার বিপরীতে হাল ধরবার মতো আর কেউ নেই। জনের ছেলের আজ পর্যন্ত সে কোনো খবর পায়নি, জনের শেষ চিঠিরও কোনো উত্তর আসেনি। ফ্রেড ভাবে, সে যখন ভার্সিটিতে উঠেছিল, তখনও তো দেশের সবকিছু ঠিকই চলছিল, এ রাজনৈতিক সংকটের উদয় হল আবার কবে? তার এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মতো কেউ নেই। ড্যান থাকলে বোধ হয় এর উত্তর দেয়ার জন্য ব্যর্থ চেষ্টা করত। তার নজর গেল এবার পিটারসনের সেই ছবির দিকে। ভাবল, খামোখাই পিটারসন নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তার পরে মানুষ কতটা অসভ্য হতে পারে, কতভাবে বিভক্ত হতে পারে জানলে তিনি নিশ্চিত তার জীবন দিতেন না এসব স্বার্থপর মানুষদের জন্য। জন লোকটাও খারাপ মানুষ না, তার পরিবারের অন্যসবার মতোই তিনিও দেশের কথা, দশের কথা চিন্তা করেন। কিন্তু কি লাভ হচ্ছে তার? নিজের ছেলের আজ খবর নেই, নিজের নাতিকে রেখেছেন এমন একজনের বাসায়, যাকে তিনি চেনেন মাত্র কয়েকমাস থেকে। এমনকি নিজে দিনরাত ২৬ ঘন্টা জীবনহানির ভয়ে থাকেন। যতদূর বোঝা যায়, তিনিও পিটারসনের মতোই আরেক বলির পাঁঠা হতে যাচ্ছেন।
মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধের অভাব তো ছিল না কখনোই, তাহলে এমন হচ্ছে কেন? কেন আজ বিশাল সাম্রাজ্য খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে গেল? এখানে কার স্বার্থ কাজ করছে? এ প্রশ্নগুলো মাঝে মাঝেই উদয় হয় ফ্রেডের মনে। কিন্তু এর কোনো উত্তর নেই। কারণ অধিকাংশ মানুষদের মতো তারও আছে একটা মানবিক দূর্বলতাঃ সেও আদর্শহীন বিবেক দ্বারা চালিত এক মানবতাধারী যন্ত্র।

WordGrid Game is on GitHub

WordGrid Game was the first ever project I worked on. The idea of the project came form my elder brother who just got admitted into BUET. He had to submit a project in the university which will be written in C with graphics based on a header file created by one of the teacher of BUET. He and one of his partner decided to give life to a very popular game played by primary students which they named 'WordGrid Game'. It is a game played usually by two players. The game is very simple:
There will be a grid (may contain unlimited number of rows and columns) where players can only fill one field at a time. First a player began by putting a letter in any field. The other user have to figure out a word that can be made out of the letter(s) in the field in addition with another word that he can input. If he inputs a letter and the letter & the previous letter(s) of the same row (right to left) or column (top to bottom) makes a meaningful word, the user will get point(s) according to the length of the word. When all the fields are filled, the game summery should be made and he who gets more points wins.
They were successfully able to made this game although it lacked many features and words. (They once used Oxford's 3000 words but unluckily they lost the project folder).
Anyway, it encouraged me to make a similar program using PHP, HTML and JavaScript. So, I wrote this program at that time (2012-2013). Now I have rewrote this program (well, I was only a beginner in PHP at that time) and transform it into OOP and made it open source under MIT license.
WordGrid Game Title Page
To fork, download or clone visit: https://github.com/MuntashirAkon/WordGrid

পুরনো মানচিত্রে মিঠাপুকুর

মিঠাপুকুর (Mithapukur) বাংলাদেশের একটি অন্যতম থানা এবং উপজেলা।

কথিত আছে যে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব সিংহাসনে আরোহন করার পর পরই মির জুমলাকে আদেশ দেন আসাম এবং কোচ বিহার দখল করতে। মির জুমলা তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে বর্তমান মিঠাপুকুর মহাবিদ্যালয়ের পেছনে ক্যাম্প স্থাপন করেন। এ সময় তার ক্যাম্পের সৈন্যরা পিপাসার্ত হয়ে পড়লে মির জুমলা পুকুর খুড়তে আদেশ দেন। তিনি পুকুরের পানির মিষ্টতায় মুগ্ধ হয়ে এ এলাকার নাম দেন মিঠাপুকুর। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, শাহ ইসমাইল গাজীই সর্বপ্রথম পুকুরটি খুড়তে আদেশ দেন। তবে যে যাই বলুক না কেন মিঠাপুকুর নামের উৎস যে ওই পুকুরটি - তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
মিঠাপুকুর নামটি বৃটিশ আমলের বিভিন্ন মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। তবে মানচিত্র সম্পর্কে যথাযথ ধারণা না থাকলে মিঠাপুকুরের নাম খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হতে পারে। নিচে কয়েকজন বিখ্যাত মানচিত্রকারকের তৈরী করা মানচিত্র দেয়া হল যেগুলোতে মিঠাপুকুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মানচিত্রগুলো দেখার আগে বলে নেয়া ভালো যে, বৃটিশরা মানচিত্র তৈরী করার সময় যে জায়গার নাম যা শুনেছে ঠিক তাই লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু তাদের সাথে আমাদের ভাষা ও উচ্চারণগত পার্থক্য থাকার কারণে তারা আমাদের কথাগুলোকে যখন উচ্চারণ করার চেষ্টা করেছে তখন সেগুলো অনেকটা বিকৃত হয়েছে। ফলে বিভিন্ন সময়ের মানচিত্রে বিভিন্ন নাম উঠে এসেছে। যেমন ধরা যাক, রেনেল সাহেব যখন নিজে মানচিত্র এঁকেছিলেন তখন তিনি মিঠাপুকুরের নাম দিলেন Mettypokra কিন্তু যখন তিনি আরো দুই ভদ্রলোক, ডুরি এবং অ্যান্ড্রু -এর সাথে মানচিত্র বানালেন তখন মিঠাপুকুর হয়ে গেল Mettypukre. আবার যুগ বদলের সাথে সাথে ইংরেজরা নামও পালটিয়েছেন। যেমন ধরুন, ১৭৭৬ সালে (নিচের ছবিতে সালটা ভুল দেয়া আছে) ডুরি কিংবা রেনেল মিঠাপুকুরকে বলেছিলেন Mettypukre বা Mettypokra. আবার বার্থলোমিউ তার মানচিত্র (১৯২২)-এ বলেছিলেন Mitapokhar পরের মানচিত্রে (১৯৫৪) Mitapukur এবং বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এখনও কোথাও কোথাও মিঠাপুকুর এর রোমানাইজড নাম Mithapukur না লিখে Mitapukur বা Mitāpukur লেখা হয় (বিশ্বাস না হলে গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন)।

[যারা নীচের মানচিত্র গ্যালারি দেখতে পাচ্ছেন না, তারা এই লিঙ্কে যান]